সরকারি কর্মকর্তা-
কর্মচারী কর্তৃক ঘুষ গ্রহনের
শাস্তি
বাংলাদেশে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারা
অনুসারে কোনো সরকারি কর্মকর্তা-
কর্মচারী কর্তৃক কোন সরকারি কাজ
বৈধ পারিশ্রমিক ছাড়া অন্যকোন রকম
বখশিস নিয়ে করা শাস্তিযোগ্য
অপরাধ।
বখশিস গ্রহণ বা গ্রহণে সম্মত বা
গ্রহণের চেষ্টা করলে সেই কর্মকর্তা-
কর্মচারী যে কোনো বর্ণনার
কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। যার
মেয়াদ তিন বছর পর্যন্ত হতে পারে বা
জরিমানা বা উভয়প্রকার দণ্ড হতে
পারে।
নিজে না করে অন্য কাউকে দিয়ে
কোনো কাজ করে দেওয়ার জন্য
বখশিস গ্রহণও এই ধারা অনুসারে ঘুষের
মধ্যে পড়ে। ঘুষ চাওয়া যেমন অপরাধ,
ঠিক তেমনি আবার কোনো সরকারি
কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে ঘুষ দেওয়ার
প্রস্তাবও অপরাধ।
কিন্তু সংসদে উত্থাপিত ‘দুর্নীতি
দমন কমিশন (সংশোধন) বিল, ২০১১’ এর
৩২ ধারার সঙ্গে ৩২ক ধারা যুক্ত করে
বলা হয়েছে, জজ, ম্যাজিস্ট্রেট বা
সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
দায়েরের ক্ষেত্রে ফৌজদারি
কার্যবিধির ১৯৭ ধারা প্রযোজ্য হবে।
ফৌজদারি কার্যবিধির ওই ধারায়
ধারায় বলা আছে, সরকারি দায়িত্ব
পালন করতে গিয়ে জজ, ম্যাজিস্ট্রেট
বা কোনো সরকারি কর্মকর্তা অপরাধ
করেছেন বলে অভিযুক্ত হলে,
সরকারের পূর্ব অনুমতি ছাড়া কোনো
আদালত সেই অভিযোগ আমলে নিতে
পারবেন না। এ জাতীয় অপরাধের
মামলা কীভাবে পরিচালিত হবে
এবং কোন আদালতের বিচার হবে
তাও সরকার নির্ধারণ করে দিতে
পারবে।
২৮ শে আগস্ট ২০১২ সালের বৈঠকে
সংসদে উত্থাপিত প্রস্তাবিত
আইনের ৩২ক ধারা বাদ দেয় সংসদীয়
কমিটি। কমিটি এখানে নতুন ধারা
যুক্ত করে বলেছে, এ আইনের অধীন
অভিযোগপত্র দাখিলের ক্ষেত্রে
দুদকের অনুমোদনপত্রের কপি আদালতে
দাখিল করতে হবে। এখানে আরও বলা
হয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধি বা
অন্য কোনো আইনে যাই থাকুক না
কেন দুদকের অনুমোদন ছাড়া এ আইনের
অধীন কোনো অপরাধ আদালত আমলে
নেবে না।
দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭
অনুযায়ী ”সরকারী কর্মকর্তা বা
কর্মচারী” বলতে দণ্ডবিধির ২১
ধারায় সংজ্ঞায়িত একজন সরকারী
কর্মচারীকে বুঝাবে এবং
কর্পোরেশন বা সরকার কতৃর্ক
প্রতিষ্ঠিত অন্য কোনো অঙ্গ বা
সংস্থার কর্মচারী এবং স্থানীয়
কতৃর্পক্ষের চেয়ারম্যান, ভাইস
চেয়ারম্যান, সদস্য,কর্মকর্তা ও
কর্মচারী অথবা আইন কতৃর্ক গঠিত বা
প্রতিষ্ঠিত যেকোনো
কর্পোরেশন অথবা অন্য কোনো
অঙ্গ বা সংস্থার চেয়ারম্যান,
পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক,
ট্রাস্টি, সদস্য কর্মকর্তা অথবা
কর্মচারী এর অন্তর্ভৃক্ত হবে।
সুতরাং, উপরোক্ত আলোচনার
পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে,
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক ঘুষ
গ্রহনের বিরুদ্ধে মামলাগুলো
বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের
সহযোগিতা নিয়ে করাই উত্তম।