নিউমোনিয়া
নিউমোনিয়া কি?
নিউমোনিয়া ফুসফুসের সংক্রামণজনিত একটি
রোগ। ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের কারণে
নিউমোনিয়া হয়। শ্বাস নেবার সময়
নিউমোনিয়ার জীবাণু শরীরে প্রবেশ করার
কারণে নিউমোনিয়া হয়। শিশু এবং বয়স্কদের
ক্ষেত্রে এটি প্রাণঘাতীও হতে পারে।
কাদের হয়?
শিশু এবং বয়স্ক ব্যক্তি যাদের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের নিউমোনিয়া
হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তবে তরুণদেরও
নিউমোনিয়া হতে পারে। বিশেষ করে সর্দি
বা ফ্লু জাতীয় অসুস্থতা দীর্ঘস্থায়ী হলে
নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়ে। যাদের এজমা,
হৃদরোগ, ক্যান্সার ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগ
রয়েছে তাদের নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেশি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা কর্মক্ষেত্রে
নিউমোনিয়া আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
এছাড়া হাসপাতালে থাকা রোগী যাদের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এমনিতেই কম তাদের
নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
দীর্ঘদিন স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবন বা
ধূমপানের কারণেও নিউমোনিয়ার ঝুঁকি
তৈরি হয়।
লক্ষণ
ব্যাকটেরিয়াজনিত এবং ভাইরাসজনিত
দু’ধরনের নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে লক্ষণ
অনেকটা একইরকম। তবে ব্যাকটেরিয়া জনিত
নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো দ্রুত
দেখা দেয়।
শরীর দূর্বল অনুভব করা, জ্বর, কাশি,
শ্বাশকষ্ট, কাঁপুনি, বুকে ব্যথা, অতিরিক্ত
হৃদস্পন্দন, শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে বুকের
অতিরিক্ত ওঠানামা, ডায়রিয়া, বমি ভাব,
বমি হওয়া, ইত্যাদি নিউমোনিয়ার লক্ষণ।
অবশ্য প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে লক্ষণের
মাত্রা কম হয়।
করণীয়
অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাড়িতে থেকেই
নিউমোনিয়ার চিকিৎসা নেয়া সম্ভব। দুই
থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে নিউমোনিয়া
ভালো হয়ে যায়। তবে শিশু ও বয়স্কদের
ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন
হতে পারে।
রোগ নির্ণয়
শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি রক্ত ও কফ
পরীক্ষা এবং বুকের এক্স-রে করা হতে
পারে। তবে গুরুতর ক্ষেত্রে আরও পরীক্ষার
প্রয়োজন হতে পারে।
চিকিৎসা
ব্যাকটেরিয়াজনিত নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে
এন্টিবায়োটিক দেয়া হয়। এন্টিবায়োটিক
সেবন শুরুর ২-৩ দিনের মধ্যেই রোগী ফল
পেতে শুরু করেন। তবে এন্টিবায়োটিকের
কোর্স শেষ না করলে বিপদ হতে পারে।
ভাইরাসজনিত নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে
সাধারণত এন্টিবায়োটিক দেয়া হয় না। তবে
অন্য ধরনের জটিলতা তৈরি হলে
এন্টিবায়োটিক দেয়া হতে পারে।
এছাড়া পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হয় এবং প্রচুর
তরল পান করতে হয়। জ্বর ও ব্যথা কমানোর
ওষুধও দেয়া হতে পারে।
প্রতিরোধ
স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের মাধ্যমে রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
সর্দি, মিজেল, জলবসন্ত ইত্যাদি জনিত
অসুস্থতা নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। তাই
এসব রোগ থেতে দূরে থাকার চেষ্টা করতে
হবে।
হাত পরিষ্কার রাখতে হবে।
হাঁচি-কাশি দেবার সময় সতর্ক থাকতে হবে।
বয়স্ক রোগী যাদের হৃদরোগ এবং ফুসফুসের
রোগ আছে তারা নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন
নিতে পারেন। এই ভ্যাকসিন নিউমোনিয়া
প্রতিহত করে না, তবে নিউমোনিয়া জনিত
অসুস্থতার মাত্রা কমায়।
নিউমোনিয়া কি?
08 Friday May 2015
Posted Treatment
in