কিছু ক্ষেত্রে দেওয়ানী আদালতের
এখতিয়ারে বাধা
মানুষ আবেগের বশবর্তী হয়ে অনেক সময় তুচ্ছ
বিষয় নিয়েও কোর্ট-কাচারীতে চলে যায় ।
সে ক্ষেত্রে কোন বিষয়টি কোন কোর্টের
বিচার্য, কোনো সময়ে বিচার্য, তাও অনেকে
বুঝতে পারে না । তাই রাজস্ব সংক্রান্ত যে
সকল বিষয়ে বুঝে শুনে আদালতে যাওয়া
উচিত তা নিম্নে আলোচনা করা হলো:
ধারা-৩০ এবং ১৪৪-খ: কোনো কোনো
জেলায় বা এলাকায় জরিপ চালিয়ে খতিয়ান
ও নক্সা প্রস্তুতের জন্য রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ
ও প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ এর ১৪৪ ধারায়
সরকারকে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে ।রাষ্ট্রীয়
অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ এর ১৪৪ (১)
উপধারা এবং সার্ভে আইন ১৮৭৫ এর ৩ ধারা
অনুসারে সরকার এরূপ জরিপের মাধ্যমে
রেকরডর্ড প্রণয়নের জন্য প্রজ্ঞাপণ মূলে
আদেশ জারী করেন । একই আইনের ১১১
ধারার বিধান সাপেক্ষে ১৪৪-খ ধারা মতে
আদেশ জারীর পর কোন দেওয়ানী আদালত
কর্তৃক সংশ্লিষ্ট এলাকার কোনে প্রজার
মর্যাদা (টাইটেল) নির্ধারণ বা ঐ এলাকার
জোত স্বত্বের বিষয়ে কোনো মামলা গ্রহণে
বাধা রয়েছে ঐরূপ আদেশ প্রদানের তারিখে
কোন আদালতে যদি কোনো মামলা
বিচারাধীন থেকে থাকে তবে তা আর চলবে
না এবং তা বাতিল বলে গণ্য হবে ।
আদেশ জারীর মাধ্যমে স্বত্বলিপি প্রস্তুতের
কোনো পর্যায়ের কোনো কার্যক্রম বা
আদেশের বিরুদ্দে কোনো দেওয়ানী
আদালতে মামলা দায়ের করা যাবে না । এ
বিষয়ে কারো কোনো অভিযোগ থাকলে
তার প্রতিকারের জন্য জরিপ বিভাগের
এখতিয়ারবান কর্তৃপক্ষ/রাজস্ব আদালতে
যেতে হবে ।
ধারা-১৩৪: জোত-জমার একত্রীকরণ
সংক্রান্ত কোন বিষয়ে কোন আবেদন বা
মামলা দেওয়ানী আদালত গ্রহণ করে না। এ
বিষয়ে রাজস্ব আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত
(রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন
১৯৫০ এর ১৩৪ ধারা)
ধারা-৪ক: ভূমি উন্নয়ন কর অধ্যাদেশ ১৯৭৬ এর
৪ক ধারা অনুসারে রাজস্ব কর্মকর্তা কর্তৃক
জমির শ্রেণী বিন্যাসকরণ বা ভূমি উন্নয়ন কর
নির্ধারণ বা এ সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে এ
অধ্যাদেশের আওতায় রুজুকৃত কোনো
আবেদন/আপিলের প্রেক্ষিতে প্রদত্ত
কোনো আদেশের বিরুদ্ধে কোনো
দেওয়ানী আদালতে মামলা বা আইনগত
কার্যক্রম চলবে না । এ বিষয়ে রাষ্ট্রীয়
অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০এর ৪৬-খ
ধারার বিধানটিও একই ।
ধারা-৮৬ (৮): সিকস্তি জমি পয়স্থি হবার পর
তার দখল সংশ্লিষ্ট তহসিলদার গ্রহণ করবে ।
এ বিষয়ে গৃহীত কোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে
কোনো দেওয়ানী আদালত কর্তৃক ব্যবস্থা
গ্রহণের বিধান নেই । (রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও
প্রজাস্বত্ব (সংশোধন) আইন ১৯৯৪)
বিধি ২৩ (৪): প্রজাস্বত্ব বিধিমালা ১৯৫৪
(১৯৫৫ সনে গেজেটকৃত) এর বিধি ২৩(৪) এ বলা
হয়েছে স্বত্বলিপি চূড়ান্ত ভাবে প্রকাশের
পর তাতে প্রতারণামূলক কোনো লিখন
রাজস্ব অফিসারের নজরে আসলে বা আনা
হলে রাজস্ব অফিসার প্রয়োজনীয় তদন্ত
শেষে প্রতারণামূলক লিখন কর্তনের আদেশ
দিতে পারবেন। এরূপ কার্যক্রম
মিনিষ্ট্রিরিয়াল কার্য বিধায় এর বিরুদ্ধে
কোন আপিল চলবে না । এরূপ আদেশের পর
রেকর্ড রুমে ও তহসিলের রেকর্ড সংশোধনের
জন্য এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষকে সংশোধিত
স্বত্বলিপির কপি দিতে হবে ।
ধারা ৫৬ (ঘ): সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ১৮৭৭
এর ৫৬ (ঘ) ধারা মতে সার্বভৌম ক্ষমতা বলে
সরকার বা সরকারী ক্ষমতা প্রাপ্ত কোনো
কর্মকর্তা কোনো কাজ করলে তার উপর
কোনো দেওয়ানী আদালত কর্তৃক
নিষেধাজ্ঞা দেয়ার বিধান নেই।
হাট-বাজার, জলমহাল/মত্স্য খামার, বনভূমি,
খাস জমি ইজারা দেওয়ার বিষয়গুলো
সার্বভৌম ক্ষমতার প্রয়োগ বলে গণ্য হবে ।
এক্ষেত্রে রাজস্ব কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই
চূড়ান্ত । এ বিষয়ে এস.এম.এস. (শাপিং
মত্স্যজীবী সমবায়) সমিতি বনাম বাংলাদেশ
সরকার মামলায় মানণীয় সুপ্রীম কোর্টের
আপিল বিভাগের রুলিংও রয়েছে। [৩৯
ডি.এল.আর.(এ.ডি.) ৯৪]
উপরোক্ত বিষয়সমূহে আদালতের এখতিয়ারে
বাঁধা থাকলেও দেওয়ানী আদালত আইনগত
কার্যধারা (Procedure) ঠিক আছে কিনা তা
যাচাই করে দেখার জন্য মামলা গ্রহণ করতে
পারে ।
কতিপয় প্রয়োজনীয় সংজ্ঞা
ভূমি: জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব
আইন ১৯৫০ এর ২(১৬) ধারা অনুসারে ভূমি
বলতে চাষ করা হয়, চাষ করা হয় না অথবা
বছরের কোনো সময় জলমগ্ন থাকে এরূপ জমি
এবং উহা হতে উত্পন্ন লাভকে বুঝায়। বাড়ি
ঘর, দালান-কোঠা, মাটির সঙ্গে সংযুক্ত
অন্যান্য জিনিস বা মাটির সঙ্গে সংযুক্ত
কোনো জিনিসের সঙ্গে স্থায়ীভাবে
আটকানো কোনো জিনিস ভূমির অন্তগᐂত।
ভূমি জরিপ: জমিদারী অধিগ্রহণ ও
প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০, সার্ভে এন্ড
সেটেলমেন্ট (এস.এস.) ম্যানুয়াল-১৯৩৫, সার্ভে
এক্ট ১৮৭৫, প্রজাস্বত্ব বিধিমালা ১৯৫৫, এবং
অপরাপর জরিপ আইনের বিধান মতে মৌজা
ভিত্তিক ভূমির রেকর্ড তথা খতিয়ান ও নকসা
প্রস্তুতের কার্যক্রমকে ভূমি জরিপ বলা হয় ।
নকশা: নকশা হলো কোনো মৌজা ভুক্ত
ভূমির বাস্তব চিত্র বা ভূ-চিত্র।
মৌজা: মৌজা হলো জরিপের একটি
ভৌগোলিক ইউনিট। একটি ইউনিয়নকে
কয়েকটি মৌজায় বিভক্ত করে এ ভৌগলিক
ইউনিট করা হয়।
জে. এল. নং: উপজেলার অন্তর্গত মৌজা
সমূহের পরিচিতমূলক ক্রমিক নম্বরকে জে. এল.
নং বা জুরিসডিকশন লিস্ট নম্বর বলে ।
মৌজার উত্তর পশ্চিম কোণ থেকে শুরু করে
পূর্ব-দক্ষিণ কোণে গিয়ে এ নম্বর দেয়া শেষ
করা হয়।
খতিয়ান: খতিয়ান হলো দখল স্বত্বের
প্রামাণ্য দলিল। এক বা একাধিক দাগের
সম্পূর্ণ বা আংশিক ভূমি নিয়ে এক বা
একাধিক ব্যক্তির নামে সরকার বা রাজস্ব
অফিসার কর্তৃক যে ভূমি স্বত্ব প্রস্তুত করা হয়
তাকে খতিয়ান বলে। প্রতি খতিয়ানের
একটি পৃথক পরিচিতি নম্বর থাকে।
খতিয়ানকে “রেকর্ড অব রাইটস” বা
“স্বত্বলিপি” বলা হয়। খতিয়ান হচ্ছে নিখুঁত
মালিকানা স্বত্ব ও দখলী স্বত্বের প্রমাণ্য
দলিল। খতিয়ানে তৌজী নম্বর, জে. এল. নম্বর,
স্বত্বের বিবরণ, মালিকের নাম, পিতার নাম,
ঠিকানা থাকে।খতিয়ানের অপর পৃষ্ঠায় দাগ
নম্বর, প্রত্যেক দাগের উত্তর সীমা (উত্তর
দাগ), ভূমির শ্রেণী দখলকারের নাম, ভূমির
পরিমাণ, হিস্যা, হিস্যা মতে পরিমাণ লেখা
থাকে। উপযুক্ত আদালত কর্তৃক ভুল প্রমাণিত
না হওয়া পর্যন্ত খতিয়ান নির্ভূল হিসাবে গণ্য
হতে থাকে।
দাগ নম্বর: একটি মৌজার বিভিন্ন মালিকের
বা একই মালিকের বিভিন্ন শ্রেণীভুক্ত
ভূমিকে নকশায় যে পৃথক পরিচিতি নম্বর
দ্বারা চিহ্নিত করা হয় তাকে বলে দাগ
নম্বর।
বাটা দাগ: নকশায় ভুল বসত কোনো প্লট এর
দাগ নম্বর বাদ পড়লে, শেষ প্লট নম্বরটির
পরের নম্বরটি নিচে লিখে এবং বাদ পড়া
প্লটের নম্বরটি উপরে লিখে (ভগ্নাংশের
ন্যায়) প্রাপ্ত যে নম্বর পাওয়া যায় তা দিয়ে
বাদ পড়া প্লটটি চিহ্নিত করা হয় তাকে বাটা
দাগ বলে।
ছুট দাগ: নকশায় দাগ নম্বর বসানোর সময় ভুল
বসতঃ কোনো একটি অংক/সংখ্যা বাদ
পড়লে অর্থাত্ ছুটে গেলে তাকে ছুট দাগ
বলে। যেমন ১, ২, ৩ বসানোর পর ৫ ও ৬ বসিয়ে
ফেলা এখানে ৪ ছুট দাগ। অর্থাত্ ঐ নকশায় ৪
নম্বর নামে কোন প্লটের অস্তিত্ব নেই।
পর্চা: জরিপ চলাকালীন সময়ে বুঝারত স্তরে
ভূমি মালিককে প্রস্তুতকৃত খসড়া খতিয়ানের
যে অনুলিপি দেয়া হয় তাকে পর্চা বলে।
পর্চা জরিপ কর্মচারী কর্তৃক অনুস্বাক্ষরিত
হওয়া উচিত।
হোল্ডিং: একটি খতিয়ানে একটি দাগ
থাকতে পারে আবার একাধিক দাগও থাকতে
পারে। এরূপ একটি খতিয়ানের অন্তর্ভূক্ত
ভূমিকে হোল্ডিং বা জোত-জমা বলে।
হোল্ডিং এর পরিচিত নম্বরকে হোল্ডিং
নম্বর বলে।
দাখিলা: ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের বিপরীতে
প্রদত্ত রসিদকে বলে দাখিলা বা আর. আর.
(রেন্ট রিসীট) দাখিলা ভূমি মালিকানা
প্রমাণের প্রাথমিক দলিল।
ডি.সি.আর: ভূমি উন্নয়ন কর ব্যতিত অন্যান্য
সরকারী পাওনা আদায়ের জন্য যে রসিদ
দেয়া হয় তাকে ডি. সি. আর (ডুপিকেট
কার্বন রিসীট) বলে ।
কবুলিয়ত (Lease Deed): কবুলিয়ত হচ্ছে এক
ধরনের শর্তযুক্ত চুক্তিনামা। যা রায়ত কর্তৃক
সরকার (পূর্বে জমিদারকে দিত) বরাবরে
দেয়া হয়।
ফিল্ড বুক: জরিপের প্রয়োজনে কিস্তোয়ার
কালে অফসেট গ্রহণসহ চলমান চেইনের
রিডিং লিখনের জন্য যে বই ব্যবহৃত হয় তাকে
ফিল্ড বুক বলে। এটি দেখে পরবর্তীতে
টেবিলে পি-৭০ সীটে স্বহস্তে নকশা অংকন
করা হয়। (জরিপ চলাকালে আমিনের জন্য এর
ব্যবহার নিষিদ্ধ)
জরিপকালে ব্যবহৃত কালি/(রং) এর বিবরণ:
ক) খানাপুরী স্তরে ব্যবহার করতে হবে
কালো কালি
খ) বুঝারত ,, ,, ,, ,, সবুজ ,,
গ) তসদিক ,, ,, ,, ,, লাল ,,
ঘ) আপত্তি ,, ,, ,, ,, বু-
কোবাল্ট ,,
ঙ) আপিল ,, ,, ,, ,, কালো ,,
পেরীফেরী: হাট বাজারের আয়তন প্রতিয়নত
সম্প্রসারিত হয়ে থাকে। এরূপ সম্প্রসারিত
অংশকে বাজারের অন্তর্ভূক্ত করা, হাট-
বাজারের তোহামহাল, চান্দিনা ভিটি ও
বন্দোবস্তযোগ্য খাসজমি চিহ্নিত করার
লক্ষ্যে সার্ভেয়ার দ্বারা সরজমিনে
পরিমাপ পূর্বক হাট-বাজারের নক্সা তৈরীসহ
চর্তুসীমা নির্ধারণ করাকে বলে পেরীফেরী।
ফারায়েজ: মুসলিম (সুন্নী) উত্তরাধিকার
আইন অনুযায়ী কোনো মুসলিম ইন্তোকাল
করলে তার রেখে যাওয়া সম্পত্তিকে
(ওয়ারিশগণ) কতটুকু পাবে তা সঠিকভাবে
নির্ধারণ বা বণ্টন করার নামই হচ্ছে
ফারায়েজ।
আসাবা (রেসিডুয়ারী): আসাবা বা
রেসিডুয়ারী শব্দের অর্থ অবশিষ্টাংশ ভোগী
মুসলিম আইনে তিন ধরনে উত্তরাধিকারের
মধ্যে আসাবা এক ধরনের উত্তরাধিকারী।
মুসলিম উত্তরাধিকার মতে অবশিষ্টাংশ
ভোগী বলতে তাদের বলা হয়েছে যারা
সম্পত্তির কোনো নির্ধারিত অংশ পান না
কিন্তু অংশীদারদের মধ্যে নির্ধারিত অংশ
বন্টনের পর অবশিষ্ট অংশের উত্তরাধিকার
হন।
পরিত্যক্ত সম্পত্তি: ২৬ শে মার্চ ১৯৭১ ইং
তারিখ হতে যে সকল নাগরিক আমাদের
স্বাধীনতার বিরোধীতা করে সম্পত্তি
পরিত্যাগ করে এদেশ ছেড়ে চলে যায় তাদের
ফেলে যাওয়া সম্পত্তিকে পরিত্যক্ত
সম্পত্তি বলে এটি মূলত, বিহারীদের ফেলে
যাওয়া সম্পত্তি।
মৌরাশি: পুরুষানুক্রমে কোনো ভূমি ভোগ
দখল করাকে মৌরাশি বলে।
বায়া (Vender): বিক্রেতা, বিক্রেতার
সম্পাদিত দলিলকে বলে বায়া দলিল।
মিনাহ (Deduction): কম, কমতি, জমি সিকস্তি
হলে তার কর আদায় স্থগিত করাকে মিনাহ
বলে।
নালজমি: আবাদ যোগ্য সমতল জমিকে নাল
জমি বলে।
তৌজি: ১৭৯৩ সালে প্রবর্তীত চিরস্থায়ী
বন্দোবস্তীয় ভূমির জন্য কালেক্টরীতে যে
রেজিস্ট্রি বই থাকতো তাকে তৌজি বলে।
প্রত্যেকটি তৌজিরই ক্রমিক নম্বর থাকে।
জমিদারের অধীনে প্রজার জোতকেও
তৌজি বলা হতো।
কটকবলা: সুদের পরিবর্তে মহাজনের দখলে
জমি দিয়ে ঋণ নিয়ে যে দলিল দেয়া হয়
তাকে কটকবলা বলে।খাতক যতদিন টাকা
পরিশোধ করবে না ততদিন মহাজন এ জমি
ভোগ দখল করতে থাকে।
চান্দিনা: বাজারের ভিটি ভূমিকে
চান্দিনা বলা হয়। এটি মূলত দোকানদারের
হোল্ডিং।
জমা বন্ধী (Rent Roll): খাজনার তালিকা।
চালা ভূমি: নালের চেয়ে উঁচু আবাদী ভূমি,
পুকুরের পাড় ইত্যাদি রকম ভূমিকে বলে চালা।
হালট: জমিজমার মধ্যবর্তী চওড়া আইল বা পথ
যার উপর দিয়ে চাষী হাল বলদ নিয়ে
চলাফেরা করে। হালটকে গোপাটও বলা হয়।
চর্চা জরিপ: চর্চা অর্থ চর পয়স্থি জমি বা
চরের জরিপ কে বলে চর্চা জরিপ। এই জরিপ
করে যে নকশা তৈরি করা হয় তাকে চর্চা
নকশা বলে।
তফসিল: কোনা জমি যে মৌজায় অবস্থিত
সে মৌজার নাম, জে. এল. নং, খতিয়ান নং,
দাগ নং, জমির শ্রেণী, পরিমাণ, জমির
চৌহদ্দি বর্ণনা ইত্যাদি পরিচিতি সম্বলিত
বিবরণকে ঐ জমির তফসিল বলে।
বাইদ: নীচু কৃষি জমিকে বাইদ বলে।
হাওর: প্রাকৃতিক কারণে কোনো বিস্তীর্ণ
নিম্নভূমি জলমগ্ন হলে তাকে হাওর বলে।
বাওড়: নদী তার চলমান পথ হতে গতিপথ
পরিবর্তন করে অন্য পথে প্রবাহিত হলে
পূর্বের গতিপথের স্রোতধারা বন্ধ হয়ে যে
বিশাল জলাভূমির সৃষ্টি করে তাকে বলে
বাওড়। নদীর বাক থেকে বাওড় কথার সৃষ্টি
হয়েছে।
রেভিনিউ কোর্ট: রেভিনিউ অফিসার যখন
আনুষ্ঠানিক ভাবে এক বা একাধিক পক্ষের
শুনানী নিয়ে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত
প্রদান করেন তখন তাকে বলে রিভিনিউ
কোর্ট (বিধি-১৩৪, এস. এস. ম্যানুয়াল-১৯৩৫)।
দেওয়ানী কার্যবিধির ৫(২) ধারা মতে যে
আদালত কৃষি জমির খাজনা/রাজস্ব বা
মুনাফা সম্পর্কে কাযর্যক্রম গ্রহণের
এখতিয়ারবান তাকে রেভিনিউ কোর্ট বলে।
প্রজাবিলি: কোনো জমি যথাযথভাবে
কোনো প্রজাকে বন্দোবস্ত দেয়া হলে
তাকে বলে প্রজাবিলি।
ছানি মামলা: দেওয়ানী আদালতে কোনো
মামলার রায় বা ডিক্রী হলে বা তদবির
অভাবে মামলা খারিজ হলে, রায় বা ডিক্রী
বা খারিজ হওয়ার বিষয়টি জানার ১ মাসের
মধ্যে দেওয়ানী কার্যবিধির অর্ডার ৯, রুল ৪,
৮ ৯, ১৩ অনুযায়ী আবেদনের মাধ্যমে
মামলাটির পুনবর্হাল ঘটানো যায়। এরূপ
আবেদন মঞ্জুর হলে মামলাটি যেখানে শেষ
হয়েছিল সেখান থেকেই পুনরায় শুরু হবে।
এটিই ছানি মামলা।
রায়: ডিক্রী বা আদেশের ভিত্তি হিসেবে
বিচারক যে বিস্তারিত বিবৃতি দেন তাই
হলো রায়। রায়ে আদেশের সমর্থনে যে সকল
যুক্তি বা কারণাদির উপর আদালত নির্ভর
করে তার বিবরণ উল্লেখ থাকে।
ডিক্রী: মামলার নম্বর,পক্ষ পরিচয়, দাবীর
বিবরণ, মামলার খরচের পরিমাণ, খরচ কি
অনুপাতে, কে বহন করবে তা এবং অন্যান্য
আনুসাঙ্গিক বিষয়াদি এতে থাকে। স্থাবর
সম্পত্তির ডিক্রীতে সেটেলমেন্ট পর্চার
দাগ, খতিয়ানও উল্লেখ থাকে। মূলত ডিক্রী
হলো রায়ের ভিত্তিতে প্রস্তুতকৃত আদালতের
দলিল।
এনুয়িটি (Annuity): ১৯৫০ সালের রাস্ট্রীয়
অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের অধীনে
সরকার যখন বিদ্যমান হাট-বাজার সমূহ গ্রহন
করে নেয় তখন সেখানে অবস্থিত কোনো
ওয়াকফ্ সম্পত্তি হাট-বাজারের প্রয়োজনে
অধিগ্রহণ করা হয়ে থাকলে ঐ সম্পত্তির জন্য
ক্ষতিপূরণের অতিরিক্ত (প্রতিষ্ঠানটি চালু
রাখার স্বার্থে) বার্ষিক বৃত্তি বা অনুদান
দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এটিই হলো
এনুয়িটি।
নয়ন জুলি (Nayan Jhuli): বাঁধ সংলগ্ন নীচু
জলা ভূমিকে বলে নয়ন জুলি।
দেওয়ানী আদালতের এখতিয়ারে বাধা
10 Sunday May 2015
Posted LAW
in