তল্লাশি পরোয়ানা
চোরাইমাল উদ্ধারের জন্য তল্লাশি
ফৌজদারি কার্যবিধির ৯৮ ধারার বিধান
অনুসারে বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট যদি সংবাদ পান বা
তাঁকে সংবাদ দেওয়া হয় যে কোথাও
চোরাইমাল মজুত রাখা হয়েছে/বিক্রয় করা
হচ্ছে বা জাল দলিল/নকল মূদ্রা/নকল বাই/
টিকিট বা এসব তৈরির সীল/যন্ত্রপাতি রাখা
হয়েছে বা কোন অশ্লীল বস্তু রাখা হয়েছে
সেক্ষেত্রে সংর্শ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট
প্রয়োজন মনে করলে তাঁর সন্তুষ্টি মত তদন্ত
করে বর্ণিত মালামাল উদ্ধারের জন্য
তল্লাশি পরোয়ারা ইস্যূ করতে পারেন। \
আটক ব্যক্তি উদ্ধারে তল্লাশি
ফৌজদারি কার্যবিধির ১০০ ধারার বিধান
অনুসারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট যদি সংবাদ
পান বা তাঁকে সংবাদ দেওয়া হয় যে কোন
ব্যক্তিকে এমন অবস্থায় আটক রাখা হয়েছে
যা অপরাধে পরিণত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট
ম্যাজিস্ট্রেট সংবাদটিতে যদি সন্তুষ্ট হন যে
আটক ব্যক্তিকে অপরাধজনকভাবেই আটক
রাখা হয়েছে তাহলে তিনি আটক ব্যক্তিকে
উদ্ধারের জন্য তল্লাশি পরোয়ারা ইস্যু
করবেন।
তল্লাশি পরোয়ানা ইস্যু ও কার্যকর করণ
১) তল্লাশি পরোয়ারার আদেশ দেওয়ার সময়
ম্যাজিষ্ট্রেটকে তীক্ষ্ম বুদ্ধিমত্তার পরিচয়
দিতে হবে, বিশেষত আটক ব্যক্তিকে
উদ্ধারের ক্ষেত্রে। আটক ব্যক্তি সাধারণত
মহিলা ও শিশু হয়ে থাকে। সংবাদাটি
ম্যাজিস্ট্রেট সন্তুষ্ট হলে এক মুহুর্তেও দেরী
না করে তল্লাশি পরোয়ানা ইস্যু করা উচিত।
২) কার্যবিধি ১০০ ধারার অধীন তল্লাশি
পরোয়ানা ইস্যু করার এখতিয়ারবান
ম্যাজিষ্ট্রেট হলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
৩) হাইকোর্ট বিভাগ বন্দিকে বেআইনী আটক
হতে মুক্তি বা আদালতে হাজির করার বা এক
হেফাজত হতে অন্য হেফাজতে স্থানান্তরের
আদেশ দিতে পারেন (কার্যবিধি ৪৯১ ধারা)।
৪) ম্যাজিস্টেট তাঁর নিজ অধিক্ষেত্রের
বাইরে কার্যকর করার জন্যও সার্চ ওয়ারেন্ট
ইস্যু করতে পারেন সেক্ষেত্রে কাঃবিঃ ৮৩
ও ৮৪ ধারা আমলে আসসে। উদ্ধার হওয়ার পর
ভিকটিম বা মালামালের সিজারলিষ্ট তৈরি
করে কার্যবিধি ৯৯ ধারা বিধান অনুসারে
নিকটতম ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট হাজির
করতে হবে।
৫) তল্লাশি পরোয়ানা কার্যকর করবেন পুলিশ
অফিসার, যে অফিসারের ওপর সার্চ
ওয়ারেন্ট নির্দেশিত হয় কেবল তিনিই
নির্দিষ্ট স্থানে তল্লাশি চালাতে পারেন।
৬) পুলিশ অপিসার আটক ব্যক্তিকে উদ্ধার
করে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট হাজির করবেন।
৭) তল্লাশি পরোয়ানা মূলে ভিকটিম বা কোন
দ্রব্য যেমন চোরাইমাল, জাল দলিল, নকল বাই,
টিকিট, মূদ্র, নকল সামগ্রী তৈরির সরঞ্জাম
যেমন সীল, ডাইস ইত্যাদি উদ্ধার করে তা
জব্দকরণসহ এর সাথে যারা জড়িতদের
গ্রেফতার করবেন।
৮) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তল্লাশি পরোয়ানা
দেখতে চাইলে দেখানে হবে (কা:বি: ১০২(১)
ধারা)।
৯) তল্লাশি যে স্থানে চালানো হবে সে
স্থান যদি আবদ্ধ হয়, সেখানে প্রবেশ করতে
যদি দরজা ভাঙ্গার প্রয়োজন হয় তবে,
সেখানকার জন্য কার্যবিধি ৪৮ ধারার
বিধান অনুসরণ করতে হবে (কা:বি: ১০২(২)
উপধারা)।
১০) যে বস্তু উদ্ধারের জন্য তল্লাশি চালানো
হচ্ছে তা যদি কেহ তার দেহে লুকিয়ে
রেখেছে বলে মনে হয় তবে উক্ত ব্যক্তির দেহ
তল্লাশি করে তা উদ্ধারের ব্যবস্থা নেয়া
যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে কার্যবিধি ৫২
ধারার বিধান অনুসরণ করতে হবে (কা:বি:
১০২(৩) উপধারা)।
১১) যেখানে তল্লাশি চালানো হবে
সেখানকার দুই বা ততোধিক সম্মানিত
ব্যক্তিকে তল্লাশিকালে সাক্ষী হিসাবে
উপস্থিত রাখতে হবে। তল্লাশির পর উদ্ধারকৃত
মালামালের তালিকা তৈরি করে তাতে
সাক্ষীদের দস্তখত নিতে হবে (কা:বি:
১০৩(১)(২) উপধারা)।
১২) তল্লাশি যে স্থনে চালানো হবে সে
স্থানের দখলকারীকে তল্লাশিকালে
উপস্থিত থাকার অনুমতি দেওয়া যাবে এবং
তিনি চাইলে প্রণীত তালিকার একটি নকল
বা অনুলিপি তাকে দেওয়া যাবে (কা:বি:
১০৩(৩) উপধারা)
নজির
বালিকার বয়স ১৬ বছরের বেশী হলে সে তার
ইচ্ছামত স্থানে যেতে পারবে- ৩৫ ডিএলআর
৩১৫।
তল্লাশি পরোয়ানা ইস্যুর জন্য বাদীকে
পরীক্ষা করার প্রয়োজন নেই, বাদীকে
পরীক্ষা করার প্রয়োজন হয় কেবল অপরাধ
আমলে নেওয়ার জন্য – ২০ ডিএলআর ৬৮।
তল্লাশি পরোয়ানা
08 Sunday Nov 2015
Posted LAW
in