জেনে নিন ভূমিকম্প হলে যা যা করবেন বাংলাদেশে বিশেষত ঢাকা শহরে বড় কোন ভূমিকম্প হলে পরিস্থিতি কী হবে, সেটা চিন্তা করতেও ভয় লাগে। যেমন আজকের ঘটনাটাই ধরুন। ৭.৫ স্কেলের ভূমিকম্পেই আজকে ঢাকা শহরের সব ভবন ছেড়ে রাস্তায় নেমে এসেছিল বেশিরভাগ মানুষ। কিন্তু হঠাত বড় ভূমিকম্প হলে, রাস্তা বা ফাঁকা মাঠে যাওয়ার সুযোগ না থাকলে কি করবেন সে সম্পর্কে নিম্নে কিছু ধারণা দেওয়া হল।আমেরিকান রেডক্রসের পরামর্শ অনুযায়ী ভূমিকম্পের সময় সবচেয়ে উত্তম পন্থা হল, ড্রপ-কাভার-হোল্ড অন বা ডাক-কাভার পদ্ধতি। অর্থাৎ কম্পন শুরু হলে মেঝেতে বসে পড়ুন, তারপর কোন শক্ত টেবিল বাডেস্কের নীচে ঢুকে আশ্রয় নিন। এমন ডেস্ক বেছে নিন বা এমনভাবে আশ্রয় নিন যেন প্রয়োজনে স্থান বদল করতে পারেন।অপরদিকে উদ্ধার কর্মীদের মতে বিল্ডিং ভেঙ্গে পড়ার সময় সিলিং যখন কোন কিছুর ওপর পড়ে একে গুঁড়িয়ে দেয়, ঠিক তার পাশেই ছোট্ট একটি খালি জায়গা বা গর্তের সৃষ্টি হয়। একে তারা বলছেন সেফটি জোন বা ট্রায়াঙ্গল অফ লাইফ। তাই ভূমিকম্পের সময় বড় কোন সোফা বা বড় কোন কিছুর পাশে আশ্রয় নিলে বাঁচার সম্ভাবনা বেশি থাকে। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য ছোট্ট একটু গর্তই যথেষ্ট। বিপন্ন অবস্থায় কুকুর, বিড়াল এবং শিশুদের একটা সহজাত প্রবৃত্তি হল কুন্ডলি করে গুটিশুটি হয়ে যাওয়া। ভূমিকম্পের সময় মানুষেরও এটাঅনুসরণ করা উচিত।রাতের বেলা ঘুমানোর সময় ভুমিকম্প হলে কোন হুড়াহুড়ি করার দরকারনেই। গড়িয়ে মেঝেতে কুন্ডলি পাকিয়ে শুয়ে পড়ুন বিছানাকে ঢাল বানিয়ে। তার মানে আবার বিছানার নীচে যেন ঢুকবেন না, বিছানার পাশেআশ্রয় নিন। তেমনি ভূমিকম্পের সময় জানালা বা বারান্দা দিয়ে লাফদেয়া এসবও করবেন না।ভূমিকম্পের সময় কখনই সিঁড়িতে আশ্রয় নেবেন না। সিঁড়ির মোমেন্টঅফ ফ্রিকোয়েন্সী বিল্ডিং-এর চাইতে ভিন্ন হয় এবং অনেক সময় বিল্ডিং ভেঙ্গে না পড়লেও সিঁড়ি দ্রুত ভেঙ্গে পড়ে।চেষ্টা করুন বাসার একেবারে ভিতরের দিকের রুমে না থেকে বাইরের দেয়ালের কাছাকাছি আশ্রয় নিতে। বিল্ডিং-এর ভেতরের দিকে থাকলে সবকিছু ভেঙ্গে পড়ার পর আপনার উদ্ধার পাবার রাস্তা বন্ধ হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বাইরের দেয়ালের কাছাকাছি থাকলে ব্লক কম থাকবে, তাড়াতাড়ি উদ্ধার পাবার সম্ভাবনাও বেশি থাকবে।বড় ভূমিকম্পের পরপরই আরেকটা ছোট ভূমিকম্প হয় যেটাকে আফটার শক বলে। এটার জন্যও সতর্ক থাকুন, না হলে পচা শামুকেই শেষমেষ পা কাটতেহতে পারে।প্রথম ভূমিকম্পের পর ইউটিলিটি লাইনগুলো (গ্যাস, বিদ্যুত ইত্যাদি)একনজর দেখে নিন। কোথাও কোন লিক বা ড্যামেজ দেখলে মেইন সুইচ বন্ধ করে দিন।সবচেয়ে বড় কথা একটি ভূমিকম্পের সময় যেটুকু সময় পাওয়া যায় সেসময় মাথা ঠান্ডা রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে। কিন্তু আমাদের চেষ্টা করতে হবে। সফল হলেই বাঁচার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে অনেকগুন।